খ্রিষ্টিয় উপাসনার গান- সেবক সঙ্গীত (Sebok Sangeet)

যীশু পরিস্কার কর আমারে

(যীশু) পরিস্কার কর আমারে
ধোয়াও আমারে আপন রুধিরে
যে রুধির ক্ষরে কালভেরি পরে।

১। পাপেতে মলিন হইয়াছে মন
কৃষ্ণবর্ণ তাহা হেরি সর্বক্ষণ
কর কর নাথ, নিজ রক্ত দান
যে রক্তেতে পাপীর সর্ব পাপ হরে।

২। সংহারক দূত আসিবে হে যবে
আমারে ছুঁইতে কুভু না পারিবে
ত্যাজিয়া আমারে অনত্র যাইবে
হেরে তব রক্ত মম অন্তরে।
-রামচরণ ঘোষ (১৮৬৭ খ্রীঃ)

যীশু খ্রীষ্টের স্মরণ লয়েছি

যীশু খ্রীষ্টের স্মরণ লয়েছি
আর ভব-ভয়ের ভাবনা কি!

১। ত্যাজ্য করে স্বভাব পুরাতন
এখন যীশু-প্রেমে মজে রে ভাই স্থির করেছি মন
ও তাঁর ধর্ম-আলো, অতি উজ্জ্বল
আমি হৃদয় মাঝে জ্বেলেছি।

২। মন ভ্রান্ত ছিল অতিশয়
তাতে পাপে ভারী প্রাণ-তরী জীবন সংশয়
এখন ঘুঁটিয়ে দন্ড, নিরানন্দ
আমি আনন্দেতে ভেসেছি।

৩। শয়তানের দুষ্ট কারখানা
এই ভোলা মনকে ভুলায়ে ছিল দিয়া মন্ত্রণা
সব দেখি ফাঁকি, মুদি আঁখি
প্রভুর চরণ হৃদে ভাবতেছি।

৪। কি করিবে শয়তান দুরাচার
এই মন-প্রাণ দিয়েছি সব খ্রীষ্টের উপর ভার
আর নাইকো শঙ্কা বাজিয়ে ডঙ্কা
আমি যীশুর রাজ্যে এসেছি।

৫। মিথ্যা ফাঁকি যত চাতুরী
আর কুজ্ঞান কুমতি সকল পরিত্যাগ করি
লয়ে যীশু-তত্ত্ব, মহামন্ত্র
আমি খ্রীষ্টের দাস হয়েছি।
-কালাচাঁদ মন্ডল (১৮৪৫)

যীশু তোমার চরণে প্রেমেরই সাগরে

যীশু তোমার চরণে প্রেমেরই সাগরে
আমায় কেন ডুবাও না।

 ১। ডুবাবে আমারে আশা করি মনে
এই তাপিত প্রাণে ধৈর্য মানে না।

২। ডাকি তোমারে ব্যাকুলিত মনে
হৃদয় মাঝারে তুমি এসনা।

৩। ডুবাবে আমারে ডাকি করজোড়ে
আমায় কেন তুমি ডুবাও না।

৪। যীশু বল মন জুড়াবে জীবন
ভবের দুঃখ জ্বালা আর রবে না।
-রজনীকান্ত রায়

যীশু হলেন মৃত্যুঞ্জয়ী পাপীর নাই আর মরণভয়

যীশু হলেন মৃত্যুঞ্জয়ী পাপীর নাই আর মরণভয়
একে দুইয়ে তিনে সাক্ষ্য সত্য প্রমাণ হয়।

১। মৃত্যু জয়ে কবলিত যীশু হয়েছেন জীবিত
মরিলে হব জীবিত নাইকো মোদের মরণভয়।

২। পাপী-তাপীর জামিন হয়ে পাপের সাজা শিরে নিয়ে
কবরের যা কবর দিয়ে মৃত্যুকে করিলেন জয়।

৩। দিয়াবলের হয়েছে ক্ষয় যীশুর শক্তির হয়েছে জয়
পবিত্র পবিত্র ও সে মেষশাবকের হল জয়।

৪। সকল দুঃখের অবসানে আনন্দ খেলিছে প্রাণে
এ আনন্দ ফুরাবার নয় দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়।

৫। মৃত্যুঞ্জয়ী যীশু নামে যাব মোরা স্বর্গধামে
বুক বেঁধে আজ আশায় আশায় আছি সেই প্রত্যাশায়।
-জয়নাথ অধিকারী

যীশু প্রেমামৃত ধারা বহে ধারা ভক্তের অন্তরে

যীশু প্রেমামৃত ধারা বহে ধারা ভক্তের অন্তরে।

১। ঐ নাম শুনিয়ে রাখালগণে, তারা চাইল না নিজ মেষের পানে রে
তারা চলে যায় গোলাশায় যীশুকে দেখিতে রে।

২। যীশুর প্রেমের উদ্দেশ্য পেয়ে (পূর্বের) পণ্ডিতগণ আসিল ধেয়ে রে
পূজে স্বর্ণ, কুন্দুরু গণ্ধরস দিয়া রে।

৩। (ঐ) নামে মরিয়াম ধ্বনি, ধরে যীশুর পা দু’খানি রে
চক্ষের জল দিয়া ধোয়াইয়া, কেশ দিয়া মুছাইল রে।

৪। শালেমস্থ বালকগণে, (তারা) উদ্ধের্ খেজুর পাতা তুলে রে
তারা নাচে গায় যীশু জয়, যীশু জয় বলে রে।

৫। যীশু প্রেমে পাগল হয়ে সাধু যোহন বেড়ায় বনে বনে রে
বলে মন ফিরাও মন ফিরাও, মন ফিরাও বলে রে।
-নিশিকান্ত হালদার

যীশুর কাছে এলে জগৎ যাবে ভুলে

যীশুর কাছে এলে জগৎ যাবে ভুলে।

১। হায়, হায়, নরকে কেন যাও, দুই চক্ষু মেলে।

২। প্রেমের ছাঁচে ঢেলে, যীশু লবেন নিজ কোলে।

৩। আমি সেই প্রেম পেয়ে, মান দিলাম ফেলে।

৪। এই প্রেমের অপার সুখ, নিলাম মাথায় তুলে।

৫। যীশুর মহা প্রেম ও দয়া কেমনে যাই ভুলে।

৬। ভাই ও ভগ্নীর জন্য তাই, আনলাম প্রেম তুলে।
-আর. এল. মুখার্জি

যীশুর চরণে লুটায় নারী

যীশুর চরণে
লুটায় নারী, ধারা বয় দুই নয়নে
(ওসে কেঁদে কেঁদে ভাসায় চরণতলে।)।

১। নয়ন জলে যীশুর চরণ, ধুয়ে দিল মরিয়ম তখন
চরণ দিল ছেয়ে শতেক চুম্বনে।

২। খুলে দিয়ে মস্তকের চুল, মুছে দিল চরণ-পদ্মফুল
যে ফুল ফোটে স্বর্গের শতদল বনে।

৩। সুগন্ধি তৈল দিল ঢেলে, প্রভু যীশুর চরণ যুগলে
পাপের ক্ষমা পাবার আশা পরাণে।

৪। এস প্রভু দয়া করে, উদয় হও এই হৃদয় মন্দিরে
তুমি এসে যীশু আপন গুণে।

৫। ধুয়ে চরণ নয়নজলে, মুছে দিব মাথার চুলে হে
চরণ পূজা করব-বাসনা-মনে।

৬। সকল পাপ আজ কর ক্ষমা, দয়াল তোমার দয়ার নাই সীমা
তোমার শান্তি দেও এই অশান্ত প্রাণে।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

যীশুর আলো কি উজ্জ্বল দেখাই খুলে প্রাণ কারে

যীশুর আলো কি উজ্জ্বল দেখাই খুলে প্রাণ কারে
(দেখ) সূর্য লাগে কোথায় তাঁর আলোর কাছে সব হারে।

১। ঐ আলো মোর অন্তরে, ভাল মন্দের বিচার করে
(তাই) সদা জেগে থাকি আমি, নির্ভর যীশুর উপরে।

২। এত জ্ঞান যীশুতে পাই, ভাষা নাহি সে সব বুঝাই
(তাই) যীশুর গান আপনি গাই, যীশুর আলোর তান ধরে।

৩। ভক্ত সকল সাবধান হও, যীশুর আলোয় প্রাণ মিলাও
(সদা) চল, মাঝে থেম নাক, সর্বপূর্ণতার তরে।
-রাজেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায় (১৮৯২খ্রীঃ)

যীশু এস আমার অন্তরে

যীশু এস আমার অন্তরে
জুড়াব প্রাণ তোমার হেরে।

১। তোমার মোহন মূরতি হেরে
যাবে দুঃখ অন্তরে।

২। আমার তাপিত প্রাণ শীতল হবে
পেলে তোমায় অন্তরে।

৩। তোমার বিচ্ছেদে নরক যাতনা
ভোগে পাপী অন্তরে।

৪। তোমার সহবাসে স্বর্গ-সুখ
হয় এই সংসারে।

৫। যীশু তুমি যথা স্বর্গ তথা
এস আমার অন্তরে।
-অজ্ঞাত

যীশু পরম ধন

যীশু পরম ধন
তাঁরে যত্ন কর আমার মন।

১। প্রভু ছাড়িলেন স্বর্গস্থান, আইলেন মর্তভূবন
ও মন, তোমারি কারণ
তিনি নরের জন্য নর দেহ, ও মন, করিয়াছেন ধারণ।

২। ও মন তোমার পাপের জন্যে, গেৎশিমানী বাগানে
কত দুঃখ তাঁর প্রাণে
ও মন তোমার মহাপাপের জন্য, তিনি ক্রুশে হলেন সমর্পণ।

৩। প্রভু যত্নের নিধি যত্নের ধন, তাঁরে ভক্তি কর আমার মন
তবে পাইবে জীবন
তাঁরে অযতন করলে রে মন, হবে নরকে তোমার গমন।

৪। যেজন বিশ্বাসে করে সাধন, সে পেয়েছে ঐ খ্রীষ্টধন
সে ধন অমূল্য রতন
ঐ ধন অনন্তকাল থাকবে রে মন, তাহার ক্ষয় নাহি হবে কখন।

৫। অতি দীনহীনের এই বচন, শুন ওরে ভোলা মন
ধর খ্রীষ্টেরি চরণ
ও মন মহাসুখে সুখী হবে, তুমি স্বর্গে পাবে সিংহাসন।
-যাকোব মন্ডল (১৮৬০)

যীশু বিনে কেহ নাই এ সংসারে

যীশু বিনে কেহ নাই এ সংসারে
এই মহা পাপের দায় কে উদ্ধার করে?

১। এই জগৎ মাঝে, যত জন আছে
তারা সবে দোষী হবে, নিজ পাপ-ভারে।

২। পিতা মাতা সুত, ভাই বন্ধু যত
তারা আমার পাপের বার নিতে নাহি পারে।

৩। ওরে আমার মন, ধর যীশুর চরণ
যিনি তোমার পাপের ভার নিলেন শিরোপরে।

যোসেফ গেল, গেছে মোর শিমিয়ন

যোসেফ গেল, গেছে মোর শিমিয়ন
যাবে বিন্যামীন চলে
না জানি কি ঘটে নিদারুণ অঘটন
আমার এই আসন্ন কালে।
ধুয়াঃ রে যিহূতা, আমি কত দুঃখ স’ব আর সংসারে।

১। যোষেফ যেদিন ছেড়ে যায় আমারে
তোদের অন্বেষণ তারে
নিজরে হাতে দিলাম সাজায়ে বাছারে
যাবে শিখিমের প্রান্তরে।

২। দিনে দিনে কতদিন চলে যায়
যোষেফ এল না ফিরে
মনে মনে ডাকি নিশিদিন দয়াময়
আন ফিরায়ে তাহারে।

৩। এল না সে, এল না ফিরে আর
যোষেফ এল না কোলে
কয়দিন পরে রক্তমাখা সেই বস্ত্র তার
পেয়ে ভাসি চক্ষের জলে।

৪। বনের পশুর হাতে যায় তার জীবন
আমার জীবন যায় শোকেে
আর কি ভবে দেখব যোষেফের চাঁদ বদন
দেখব আমার এই দুই চোখে।

৫। দিনে দিনে গেল দিন, বছর, মাস
ভুলিতে পারি না তারে
মনে মনে জাগে চিরদিন এই আশ্বাস
যোষেফ আসবে আবার ফিরে।

৬। মিছে আশা, মিছে মোর সে স্বপন
দিন তো ফুরায়ে গেল
মিশর হতে সংবাদ এল, মোর শিমিয়ন
রাজার হাতে কয়েদ হইল।

৭। কিভাবে তার কাটে দিন, কি দুঃখে
আর কি মুক্তি সে পাবে?
আর কি তারে দেখব আমার এই দুই চক্ষে
আর কি সে দেখা দিবে?

৮। ধৈর্য ধরি, বল না কেমনে
পাব সান্ত্বনা কিসে?
বিন্যামীনের জীবন বাঁধা মোর জীবনে
তারে পাঠাই কোন সাহসে।

৯। বিন্যামীনকে যেতে আর দিবনা
এই পণ করেছি মনে
অব্রাহামের ঈশ্বর, শোন মোর প্রার্থনা
কর রক্ষা বিন্যামীনে।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

ভুলিয়া না যাই, যেন ভুলিয়া না যাই

ভুলিয়া না যাই, যেন ভুলিয়া না যাই
অফুরন্ত দয়া তেমার, অনন্তকাল স্থায়ী ।

১। (তোমার) যত দয়া এ জীবনে, দেশে দেশে ও ভূবনে
দণ্ডে দণ্ডে নিশি দিনে, সর্বক্ষণে পাই।

২। (আমি) কেবল মাত্র তোমার দয়ায়, পিতে হে চিনেছি তোমায়
পেয়েছি ঐ পায়ে আশ্রয়, চিরকালের ঠাঁই।

৩। যে তোমার দয়ার কথা, চিরদিন রয় প্রাণ গাঁথা
কৃতজ্ঞতা যেন প্রাণে থাকে সর্বদাই।
                                                                                                                   -প্রিয়নাথ বৈরাগী (১/১/১৯৪৭ খ্রীঃ)

শুনেছ বিনতি, অগতির গতি প্রণতি প্রণতি প্রণতি চরণে

শুনেছ বিনতি, অগতির গতি প্রণতি প্রণতি প্রণতি চরণে
তোমার দয়ার কথা যীশু জগত্রাতা, রবে প্রাণে গাঁথা জীবনে-মরণে।

১। নিয়া ভরাভয় শ্রীকরকমলে
দাঁড়ালে হৃদয়ের উদয় অচলে
শত-সূর্য্য প্রভা জ্বলে পদতলে, করুণা প্রবাহ বহিছে নয়নে।

২। করিলে মার্জনা অপরাধ যত
তিমির রজনী হইল বিগত
শুভ প্রভাত এসে হয়েছে উদিত, বিহঙ্গ সঙ্গীতে ঝংকৃত ভূবনে।

৩। শুভক্ষণে আজি মম এ জীবন
পাদপদ্মে তব করি সমর্পণ
কাটে এ জীবন গুণগানে যেন, তোমার এই অসীম করুণা স্মরণে।

-প্রিয়নাথ বৈরাগী (১৫/৯/১৯৪৮ খ্রীঃ)

লুকাল তিমির দিনপতি

লুকাল তিমির দিনপতি।
ফাঁটে গিরিশিরে, কঠিন পাষাণ চুড়া
ভূকম্পনে থর থর, কাঁপিছে বসুমতি
হেরি বিকলা বিষাদ আকুলা প্রকৃতি।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

শুভদিনে এসেছ, দয়াময় হে

শুভদিনে এসেছ, দয়াময় হে
দয়াময় যীশু হে, এ ধরায়
তোমার আগমনে হেরি চারিদিক আনন্দময়।

১। শুনি আকাশে মঙ্গল ধ্বনি সুর পুরবাসী মুখে
তোমার বিজয়-গাঁথা গাহিছে মনের সুখে
ধরাতলে নরকূল, মর্ত উল্লাসে, পুলকে
স্বর্গ-মর্ত সমস্বরে, গাহে তোমার নামের জয়।

২। ঐ যে হাসিছে প্রভাতী তারা, চেয়ে তব মুখ পানে
(সহস্র সুধাংশু সম অতুলন এই ত্রিভূবনে)
জগৎ পূজ্য জ্ঞানী জন, লুটাইছে শ্রীচরণে
রতন, মুক্তা, মণি রেখে তোমার রাঙ্গা পায়।

৩। আজি প্রণমে পদ পঙ্কজে, দীনহীন এই অভাজনে
সঁপিয়া তোমারে প্রভু, দেহ, আত্মা, জীবন ও মন
ইহকাল আর পরকাল, সর্বরাধ্য ঈশ্বর-নন্দন
যুগে যুগে অধীনেরে দিও তোমার পদাশ্রয়।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

সকল ধন্যবাদ মহিমা গৌরব তোমার

সকল ধন্যবাদ মহিমা গৌরব তোমার
জয় হোক্‌ জয় হোক্‌ যীশু, জয় হোক্‌ তোমার।
প্রসংশা পরাক্রম প্রতাব তোমার
জয় হোক্‌ জয় হোক্‌ যীশু, জয় হোক্‌ তোমার।

১। জঘন্য পাপী আমি অতি দুরাচার
প্রেমে তরালে মোরে প্রেম অবতার
প্রেমের অবতার তুমি দয়ার অবতার
জয় হোক্‌ জয় হোক্‌ যীশু, জয় হোক্‌ তোমার।

২। রোগ হতে আরোগ্য করলে মহিমা তোমার
সম্পদে-বিপদে সহায় হয়েছ আমার
দয়ার উপর দয়া কত, পেয়েছি তোমার
জয় হোক্‌ জয় হোক্‌ যীশু, জয় হোক্‌ তোমার।

৩। পথে-ঘাটে, মাঠে বান্ধব, হয়েছ আমার
দেখেছি দেখেছি তোমার প্রেম ব্যবহার
অনুগ্রহ করিয়াছ কত শত বার
জয় হোক্‌ জয় হোক্‌ যীশু, জয় হোক্‌ তোমার।
-জয়নাথ অধিকারী

সকল পথের শেষে এসে

সকল পথের শেষে এসে
পেয়েছি প্রভু তোমার দেখা
সকল সাথী গেছে ফিরে
তুমিই শুধু দাঁড়িয়ে একা।

পথের মাঝে বারে বারে
যতই গেছি দূরে সরে
দেখি তবু ঘুরে ঘুরে
ঐ যে তোমার চরণ-রেখা।

যদি কেহ শুধায় মোরে
এমন সাথী কে সে
সুখে দুঃখে সকল কাজে
সদাই পাশে পাশে।

বলব আমি সবার মাঝে
সে সাথীর মোর খোঁজ মিলিছে
পরাণ আমার ভরে গেছে
সার্থক আমার যীশু ডাকা।
-নির্মলানন্দ সরকার

সদা জাগে মনে ঐ চাঁদ বদন

সদা জাগে মনে ঐ চাঁদ বদন
তোমার শ্রীমুখ যায় না ভুলে থাকা
আমি পাগল হলেম প্রাণে ম’লেম্‌
বাঁচাও বাঁচাও প্রাণ সখা।

১। তোমার শ্রীমুখের কান্তি, ঘুচায় মনের সকল ভ্রান্তি
জুড়ায় হৃদয় দেয় গো মান্তি, দয়াল রয় না কিচুই ঢাকা
মনের পাপের আঁধার দূর করে দেয়, পূর্ণ চন্দ্রের জ্যোতিরেখা।

২। তোমার দুটি সজল নয়ন, ভুলায় আমার এই ভোলা মন
শীতল করে তাপিত জীবন, তোমার দৃষ্টি সুধা মাখা
যেন মেঘ আড়ালে আলো জ্বলে, সোনার কান্তি জ্যোতিরেখা।

৩। তুমি পূর্ণ দয়ার আঁধার, পূণ্য সুধা প্রেমের ভাণ্ডার
তোমতে হেরি অনিবার, দয়াল সুখ শান্তি লেখা
যেন দুঃখে-সুখে পাই তোমাকে, প্রাণে থাকে আঁকা।
-রূবেন সরকার

সত্য গুরুর চরণ ধর আমার মন

সত্য গুরুর চরণ ধর আমার মন
সত্য গুরু না ভজিলে, হবে নরকে তোমার গমন।

১। যে জন ভবে সত্য গুরু, গুরুর গুরু কল্প তরু, ঈশ্বর নন্দন
সে জন মানুষ হয়ে এল ভবে, ধোয়াল শিষ্যের চরণ।

২। প্রেম শিক্ষা তাঁর শিক্ষার মূলে
প্রেম শিখায় সে মরণ কালে, প্রেমই তাঁর জীবন
তাঁরে পাবি যদি নিরবধি, কর গে তাঁর অন্বেষণ।

৩। শিষ্যের জন্য সে জন মরে, নিজ প্রাণ দেয় ক্রুশোপরে প্রেমের মহাজন
সে জন পাপীর তরে, দ্বারে দ্বারে, প্রেম ধন করে বিতরণ।

৪। যীশু খ্রীষ্ট নামটি ধরে, এসেছেন এ সংসারে, অমূল্য রতন
শিখায় মানুষকে, সে মানুষ হতে, দেখ এসে সে মানুষ কেমন।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

সত্য সনাতন নিত্য নিরঞ্জন জয় জয় পতিত পাবন

সত্য সনাতন নিত্য নিরঞ্জন জয় জয় পতিত পাবন।

১। মোরা অপরাধী, পাপ করেছি জন্মবধি
ক্ষমা কর ওহে জগৎপতি (এখন)।

২। তোমার নামে দুই তিন জনে, উপস্থিত হয় যেখানে
বলছ তুমি থাকবে সেই স্থানে (নাথ)।

৩। লয়েছি স্মরণ আজি, ওহে রাজাধিরাজ
সভামাঝে অধিষ্ঠিত হও আজ (নাথ)

৪। তোমার অতুল শোভা কি মাধুরী মনোলোভা
দেখিলে ভুলিতে কে পারে (ঐ রূপ)।

৫। দেও নয়ন খুলে দেও, এসে সম্মুখে দাঁড়াও
নয়ন ভরে দেখিব তোমারে (নাথ)।
৬। মোরা আকিঞ্চন, অতীব দীনহীন
কে চাহিবে মুখ পানে ফিরে (দয়াল)।

৭। তুমি তো প্রেমময়, যথা-প্রেম তুমি তথায়
প্রেমবন্যায় ভাসাও এসে সবার (এখন)।

৮। তুমিতো আনন্দময়, নিরানন্দ নাইকো তোমায়
আনন্দে মাতাও এসে সবার (এখন)।
-জয়নাথ অধিকারী

সোনার বরণ মানুষ রতন প্রেমিক বিনে সেধন পায় না

সোনার বরণ মানুষ রতন প্রেমিক বিনে সেধন পায় না
আমি নিরবধি ঐরূপ দেখি গো রূপ দেখে প্রাণ পূরে না।

১। কাঁটার মুকুট শিরে পরা হাতে পায়ে পেরেক মারা গো
তাঁর সোনার অঙ্গে কৌপন পরা গো
ভবে এমন মানুষ আর মিলে না।

২। দুটি নয়ন জলে ভরা, প্রেমে আকুল নয়ন তারা গো
দেখে নর-নারী গৃহ ছাড়া গো
তারা প্রেমের টানে ঘরে রয়না।

৩। মার্থা, মরিয়ম ছিল ঐ প্রেমেতে ডুবে গেল গো
আর কত জনে ধিক্কার দিল গো
সাধু পিতার যোহন চেয়ে দেখ না।

৪। কিবা তাঁহার রূপের ছটা জীবন জলে মাতাল আছে গো
আমার হৃদয়ের মাঝে প্রেমের কাঁটা গো
ফোটে দিবানিশি সে যন্ত্রণা।

৫। ঐ প্রেমেতে ডুবে যাব কেঁদে কেঁদে পায়ে পড়ব গো
আমি ঐ চরণে জীবন দিব গো
আমার মনে আছে এই বাসনা।
-রূবেন সরকার