খ্রিষ্টিয় উপাসনার গান- সেবক সঙ্গীত (Sebok Sangeet)

অপার মহিমা তব, নাহিক হে তুলনা (Oper Mohima Tobo)

অপার মহিমা তব, নাহিক হে তুলনা
অতুল তোমার প্রেম, কে করে হে বর্ণনা।

১। তুমি নিজ পুত্র দিলে, তরিতে পাতকিদলে
দিয়াছ সকলি প্রভু করিয়া ত করুনা।

২। শোক-দুঃখে অভিভুত, ছিলাম যখন পিতঃ
তোমারই প্রেম-বাহুতে, করেছ হে সান্তনা।

৩। তোমার শ্রীমুখ-জ্যোতি, দেখিয়াছি দিবারাতি
রক্ষিয়াছ নাথ তুমি, হতে বিপদ যন্ত্রণা।

৪। যাগ যজ্ঞে নহ প্রীত, তব যজ্ঞ চূর্ণ চিত
লহ আজি তাহা পিতঃ, পূর্ণ কর কামনা।

আমরা যীশুর সেবক (Amra Jishur Sebok)

আমরা যীশুর সেবক- আমরা যীশুর সেবায়
জীবন কাটাব ভাই তাঁহার সেবায় (এই ধরায়)।

১। যে রত থাকে ভাই যীশুর সেবায়
আনন্দে মেতে যীশুর নাম গুণ গায়;
আমরা যীশুর নামে এসে এক স্থান
নাচিয়ে যীশু নাম গুণ গাই।

২। যখন আমরা সবি একস্থানে, ডাকি হয়ে
এক প্রান যীশুর নামে
তিনি নিজ গুণে আসেন সেখানে তাই তাঁর
আত্মার শক্তি আমরা পাই।

৩। যীশু আছেন মোদের হৃদয়ে-রে ভাই
অনিত্য অন্তিমের কোন ভাবনা নাই
তিনি আছেন যেখানে নিবেদন সেখানে, মহানন্দে
মেতে আমরা জয় যীশু জয় গাই।

অভয় বাণী শুনবার আশে আছি চেয়ে মুখপানে (Avoi Bani Sunber)

অভয় বাণী শুনবার আশে আছি চেয়ে মুখপানে।
নীরব থেক না আর বাক্য ব্রহ্ম, একবার কথা বল চাঁদ বদনে।

১। মুখের বাক্যে সৃষ্টি, স্থিতি, লয়
জীবন মরণ, সুখ-দুঃখ-তপি,
কত আসে আবার যায়।
তোমার মুখের বাক্যে সৃষ্টি হইল, আবার
প্রলয় হবে শুনি শেষ দিনে।

২। তোমার আজ্ঞায় এলেম জগতে
আবার যেদিন হুকুম হবে, ফিরে হবে হে যেতে
আজ মোর জীবনকালে কথা বল
আমার আসা যাওয়ার এই মাঝখানে।

৩। অগোচরে থেকে আড়ালে
কত দয়া কত অনুগ্রহ দিয়েছ ঢেলে
আবার বিপদ কালে দেখা দিয়ে উদ্ধার করেছ এ অধম জনে।

৪। দাঁড়ালে আজ সম্মুখে এসে,
রূপের ছটায় সারা জগত সৃষ্টি গিয়াছে ভেসে
বল “শান্তি হোক, হোক নূতন সৃষ্টি”
আমার জরাজীর্ণ এ জীবনে।

অবুঝ মন রে আমার মানেনা প্রবেধের বারণ- Abuj Mon Re Amer

অবুঝ মন রে আমার মানেনা প্রবেধের বারণ
ওরে দেখা দিয়ে আমায় ফেলে, কোথায় কর যে পলায়।

১। ব্যথার আসন বুকে পাতিয়া তুমি আসবে বলে,
জীবনে মোর জীবন সাথিয়া;
কবে দুঃখের মধ্যে এসে তুমি, করবে আমায় বক্ষে ধারণ।

২। আমার এই গান না শুনবে যদি
তবে কণ্ঠে কেন মোর সুর দিলে নিষ্ঠুর দরদী
তোমার দেওয়া সুরে নিরবধি কাঁদি যেন, প্রভু তোমার কাঁদন।

৩। অধম বলে যদিও দিনযামী
তবে কেঁদে ফিরে তবুও বিশ্বাস হারাইনি আমি
কবে দুঃখের মধ্যে এসে তুমি, করবে আমায় বক্ষে ধারণ।

আজ মহা পরিত্রাণ ভাই, আজ মহা পরিত্রান- Aj Moha Poritran Bhai

আজ মহা পরিত্রাণ ভাই, আজ মহা পরিত্রান;
যীশু উঠেছেন দেখ পাপীরে করিতে ত্রাণ।

১। চেয়ে দেখ কবর পানে, যীশুর দেহ নেই সেখানে,
(শুধু) বস্ত্রগুলি পড়ে আছে, দূতে করে সাক্ষ্যদান।

২। মগ্দালিনী মরিয়ম, করেন যীশুর অন্বেষণ;
(ও ভাই) মালি ভেবে শুধায় তারে, কোথায় আমার ত্রাণধন।

৩। বিশ্বাসী যদিও মরে, তবু সে উঠিবে পরে।
(ও ভাই) মৃত্যুঞ্জয়ী যীশু সেই, সত্যের চির প্রমান।

৪। যীশু আগে স্বর্গে গিয়ে, স্বর্গ দুয়ার দিলেন খুলে,
যাব যাব স্বর্গে যাব, যীশুর রক্তে পেয়ে ত্রাণ।

৫। নেচে নেচে তালে তালে, সবে মিলে বাহু তুলে,
(এখন) জয় যীশু, জয় যীশু, বলে কর তাঁহার গুণ কীর্তন।

অপূর্ব প্রেমে প্রভু এ জগৎ মাতালে (Apurbo Preme Provu)

অপূর্ব প্রেমে প্রভু এ জগৎ মাতালে
তুমি প্রেম বলে, ধরাতলে বিজয়ী হইলে।

১। তুমি প্রেম করে, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
তুমি প্রেম করে নরের তরে, এ ভবে আইলে।

২। তুমি ভবে এসে, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
তুমি ভবে এসে, কত ক্লেশে জীবন যাপিলে।

৩। তুমি পাপীর তরে, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
তুমি পাপীর তরে, ক্রশোপরে মরণ ভুগিলে।

৪। আমার প্রেম-তরী, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
আমার প্রেম-তরী, প্রেমকরি পাপী পার করিলে।

৫। আমার প্রেম-রতন, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
তুমি প্রেম রতন, তোমায় যতন করিব সর্বকালে।

৬। তোমার প্রেমরসে, (যীশু হে, ও আমার দয়াল যীশু)
তোমার প্রেমরসে, বঙ্গদেশে, মাতাও সকলে।

আজ এই শুভ দিনে চাহি তব দয়া- Aj Ai Suvu Dine

আজ এই শুভ দিনে চাহি তব দয়া
হও বিরাজিত রাজরাজেশ্বর আজ এই সভা মাঝে
প্রসারিত কর তোমার স্নেহশীতল পক্ষ ছায়া।

১। যে যুবক যুবতী আজি বসেছে চরণে তব
কৃপাদৃষ্টি তাদের প্রতি কর তুমি
নিজ হস্তে তাদের শিরে দেও আশীর্বাদ অভিনব
তোমার প্রেমানন্দে তুমি পূর্ণ কর তাদের হিয়া।

২। সুখে দুঃখে তাদের দৃষ্টি থাকে যেন তোমার প্রতি
থাকে প্রাণে প্রজ্জ্বলিত তোমার ঐ শ্রীমুখের জ্যোতি
যেন তোমার শুভ ইচ্ছা পালন করে দিবারাতি
তোমার পায়ে উৎসর্গ করি এ দম্পতির জীবনকায়।

৩। মুক্তি প্রদান কর এদের তোমার নিজ সন্তান বলে
রাখ এ দু’জনে তুমি তোমার উদার চরণ তলেে
এ জীবনে জীবনান্তে ইহকাল আর পরকালে
করে যেন তোমার সেবা চিত্ত মন প্রাণ দিয়া।

আজি পূজিব পদ রাজীব তব, হে দেবাদিদেব নন্দন- Aji Pujibo Podo

আজি পূজিব পদ রাজীব তব, হে দেবাদিদেব নন্দন
তোমার শ্রীপাদপদ্ম পরমারাধ্য, দেব মানব বন্দন।

১। স্বর্গে সাধুজন বৃন্দে সঁপিয়া মুকুট মণি
সদা করে নিশিদিন, বিরামবিহীন, যীশু নামে জয়ধ্বণন হে।

২। মোরা অভাজন অতি দুরাত্মা দুর্মতি, ভকতিবিহীন পাপী;
তোমার শ্রীচরণ অর্চণ করিতে মনন, দেহ প্রাণ পদে সঁপি হে।

৩। এসে হও অধিষ্ঠিত হে ঈশ্বর সুত; কৃপা করি নিজ গুণে
কর বাসনা পূরণ, দেও দরশন, অধম পাতকী জনে হে।

৪। তোমার জিন আত্মাদানে, কর সর্বজনে, একচিত্ত একমনা;
করি আত্মসমর্পণ, পূজিব চরণ; করিব হে আরাধনা হে।

৫। মোরা বাক্য-কায়-মনে, লুটাব চরণে, চির-জীবনেরি মত,
প্রভু শুন হে বিনতি, বিরত শকতি, কর কৃপা দৃষ্টিপাত হে।

আজি গানে গানে প্রচারিব প্রভু- Aji Gane Gane Procaribo

আজি গানে গানে প্রচারিব প্রভু, তোমারই সুসমাচার
সে গানের সুর ভাসিয়া চলিবে দেশান্তরের পর
বিশ্ব ভূবন শুনিবে সে গান কন্ঠ মিলবে আর দেশান্তরের পার।

তব জনমের মহান বারতা, দিকে দিকে আজ ঘুঁচবে জড়তা
যে এসেছ, হে মুক্তিদাতা, ঘুঁচাতে জড়তা
তুমি যে এসেছ, হে মুক্তিদাতা, ঘুঁচাতে পাপের ভার দেশান্তরের পার।

সুরে ছন্দে রচিব, হে নাথ, তোমারি মহা প্রেম-গাঁথা
সে মহা প্রেমের বাঁশি যে আজিকে জুড়াবে দুঃখ ব্যাথা।
গানে গানে মোরা প্রচারিব, প্রভু, তব জনমের সুসমাচার
বিশ্বভূবন শুনিবে সে গান কন্ঠ মিলাবে আর দেশান্তরের পার।

আজ এই কালনিশি ভোরে- Aj Ai Kalo Nishi Vore

আজ এই কালনিশি ভোরে-
স্বপনে শুনেছি মধুর মঙ্গল-ধ্বনি-আকাশ জুড়ে।

১। ডুবেছে চন্দ্র তারা, আকাশে আঁধার ভরা চেতনহারা
প্রাণী নিঃশব্দ সংসারে।
বেজে উঠল দূতের বাণী মধুমাখা সুরে,
“তোরা জেগে উঠে বস জগদ্বাসী দেখবি যদি নয়ন ভরে।”

২। চেয়ে দেখ মেলে নয়ন, ওঠে ঐ ত্রাণের মতন,
ভেসে গেল ত্রিভূবন আলোকের জোয়ারে।
খুলে গেছে সোনার দুয়ার আনন্দ নগরে
নরের সাধনের ধন ঈশ্বর নন্দন এসেছে আজ মর্তপুরে।

৩। আনন্দে হয়ে মত্ত, চলেছে পথিক যত
দেখিতে নবজাত ঈশ্বর কুমারে
দায়ুদ নগরে বৈৎলেহেমের গোশালার ভিতরে
ঐ দেখ ফুটেছে সেই সোনার পদ্মরূপে ত্রিলোক আলো করে।

৪। ধন্য আজ এ ধরনী, ধন্য সেই গুণমণি
ধন্য তাঁর প্রেম তরণী সংসার পারাবারে।
পার হয়ে সব পাপী তাপী যাবে, অমরপুরে হবে নামের গুণে
শমন দমন, দুঃখ-তাপ পলাবে দূরে।

৫। “জয় যীশু যীশু” বলে, আয় মোরা যাই সকলে
তাঁহার সেই চরণতলে পূজিতে তাঁহারে!
“জয় যীশু, জয় যীশু” বল সবে উচ্চঃস্বরে, কর আনন্দ গান
গাও যীশু নামে, বল ঐ নাম বদন ভরে।

আজ এই প্রভাত কালে- Aj Ai Provat Kale

আজ এই প্রভাত কালে
ঐ যে কে কাঁদে ঐ উদ্যান মাঝে- যীশু যীশু বলে।

১। ঐ যে শুনি কে কাঁদে ঐ পাগলাপারা
তাঁর কাঁদনে দিচ্ছে সাড়া কোকিলে
শুনে আকাশে প্রভাতি তারা ভাসে চক্ষের জলে।

২। ঐ যে দেখি পূর্ব আকাশে দিল দেখা
নিশি ভোরের সোনার রেখা সকালে
নারী কবর পাশে কাঁদে একা পড়ে ভূমিতলে।

৩। ঐ যে বসে প্রভু যীশুর কবর ধারে
কবরে না পেয়ে তারে অকালে,
বুঝি মরিয়মের বক্ষ পুড়ে শোকের অনল জ্বলে।

৪। ওগো নারী মুছে ফেল নয়নের জল
নিভে যাক ঐ শোকের অনল একালে,
ছেড়ে কবর উঠে গেছেন দয়াল দেখবি সকলে।



আজ এই নিশি ভোরে একবার ডাক দেরে মন- Aj Ai Nishi vore

আজ এই নিশি ভোরে একবার ডাক দেরে মন সেই গুণনিধি
বদন ভরে ডাক দেখি তায় আজ একবার ডাকরে হৃদয় ভরে।

১। হল যখন নিশি আঁধার, আমি হারালাম তা পেলাম না আর
হৃদয় রতন আমার;
ভোরের বেলায় দুঃস্বপনে আমি দেখছিলেম তাঁরে।

২। এবার আঁধার কেটে গেছে, একবার ডাক দেখি যে কোথায় আছে
এই গজৎ মাঝে;
দয়া যদি করে সেজন, দেখা দিলে দিতে পারে।

৩। দেখা যদি না দেয়-সেজন, ও তোর জীবনের আর কি প্রয়োজন
মিছে সব আয়োজন;
একবার দেখা পেলে তাঁরে জীবন সফল এ সংসারে।

৪। বদন ভরে ডাক দেখি-তায়, একবার খুঁজে দেখ সে কোথায় আছে 
আজ এই প্রভাত সময়;
কি জানি সে খুঁজে তোর কাছে তোর হৃদয় মন্দিরে।

৫। স্বর্গের বিভব ত্যাজ্য করি, ভবে এসেছে সেই ত্রাণ-কান্ডারী
নরের দুঃখ হারী;
ঐ শুন কার ঐ মধুর ধ্বনি, কে ঐ ডাকিছে তোমারে।

৬। ডাক যারে হৃদয়ে তুমি তোমার হৃদয়ের সেই অন্তযামী
সেই জগৎ স্বামী;
তুমি যারে খুঁজে বেড়াও সেজন খুঁজিছে তোমারে।

আজি- স্বাগতঃ স্বাগতঃ শুভদিনে- Aji Sagoto

আজি- স্বাগতঃ স্বাগতঃ শুভদিনে
বন্দে প্রেমানন্দে বসুন্ধরা ঐ শ্রীচরণ অরবিন্দে;
বিশাল এ ব্রহ্মান্ডে মত্ত উল্লাসে আনন্দ গানে।

১। বিচিত্র বাদ্য ধ্বনি ত্রিবিদ তোরণ দ্বারে
ঝংকারে সুবর্ণ বীণা স্বর্গীয় দূতের করে
যীশু নামে মহাগীতি উঠিতেছে ত্রিভূবনে।

২। গোলক আলোয় ত্যাজি বিলাইতে মুক্তিধন
জন্ম নিলে ভূমন্ডলে যীশু ঈশ্বর নন্দন,
প্রণমে চরণাম্বুজে দীনহীনে এই অভাজনে
হও তুমি অধিষ্ঠিত দীনের হৃদি ভবনে।

আমি যীশু যীশু বলে যবে ডাকি তোমায় (Ami Jishu Jishu Bole Jobe)

আমি ‘যীশু যীশু’ বলে যবে ডাকি তোমায়
তুমি সাড়া দিও প্রাণে, ওহে দয়াময়।

১। দিও তোমার পাদপদ্ম, হে মম পরমারাধ্য
(আমার) শুদ্ধ হয় যেন চিত্ত পাদ ধূলায়।

২। তোমার শ্রীমুখে জ্যোতি, দেখিতে দিও শকতি
(মনের) সন্দেহ ভীতি যেন দূরে পলায়।

৩। বায়ু বিকম্পিত নল, সম এ চিত্ত চঞ্চল
(প্রভু) দিও প্রাণে বল তোমার সেবায়।

আজি সকাতরে ডাকিতে তোমায় (Aji Sokatore Dakite Tomay)

আজি সকাতরে ডাকিতে তোমায়-দয়াময়
শ্রান্ত-ক্লান্ত এ তনু ব্যাথা জর জর
বিষাক্ত বিষাদ কাঁটা ফুটেছে হৃদয়ে।

১। পথ হারা, সাথী হারা, দিশেহারা অন্ধকারে
গহন কাননে আমি বড় নিরুপায়।

২। এ সঙ্কট কালে তুমি যীশু বিপদ ভঞ্জন
অধমে তারিতে প্রভু, হও এসে উদয়।

৩। অন্ধকারে আলো তুমি, নিরাশ জনের আশা
নিজ গুণে দীনহীনে- তারো অসময়।

আমি দেখে এলাম গো, সেই নরোত্তম- Ami Dekha Alam Go

আমি দেখে এলাম গো, সেই নরোত্তম- গেৎশিমানী বাগানে
প্রভু জেগে আছেন একা, যখন জাগে না কেউ ভূবনে।

১। জগৎ সংসার আঁধার মগন, জগৎবাসী ঘুমে অচেতন
একা জেগে আছেন ঈশ্বর নন্দন, নিদ্রা নাই তাঁর নয়নে।

২। সোনার অঙ্গ কাঁপে থর থর, ঘর্মধারা বহে নিরন্তর
দেখি ভূলুণ্ঠিত ঈশ্বর কুমার, শয়ান ধূলি শয়নে।

৩। বন্ধু কে নাই রে নিকটে, দীনবন্ধুর বিষম সঙ্কেটে
হায়রে এ অঘটন কেন ঘটে, সৃষ্টিকর্তার জীবনে।

৪। বাঁচাইতে পাপী নারী-নর, জগতের পাপ লয়ে শিরোপর
আজি ব্যাকুল হলেন ঈশ্বর কুমার, মুক্তির পথ অন্বেষণে।

৫। মরণ তিনি করেছেন বরণ, বাঁচাইতে পাপী নরগণ;
এবার পাবে এই বিম্ব ভূবন, জীবন তাঁহার মরণে।

আমি করবো কেবল তোমার গুণগান (Ami Korbo Kabol Tomer Guno gan)

আমি করবো কেবল তোমার গুণগান, বসে দিনরাতে
সকাল যাবে দুপুর যাবে, বিকেল যাবে গীতে।

১। সন্ধ্যা বেলায় তারায় তারায় আকাশ ছেয়ে যাবে
আগা গোড়ায় আঁধার লাগবে ধরায়।
তোমার নামের প্রসংসা গান করব আকাশ পথে।

২। গভীর হবে নিশিথিনী, তখন ঘুমাবে জগতের প্রাণে
ওহে ত্রানমনি নীরব, নিথর কালে, নিশি উঠবে মেতে।

৩। কেটে যাবে কালনিশি তখন কোকিল ডাকে কুঞ্জে বসি
বাঁজবে ভোরের বাঁশি
তোমার নামের প্রসংসা গান, আমি করব সেই প্রভা।ে

৪। সুখে দুঃখে সারা জীবন, তোমার গুণগানে করব যাপন
আমার এই আকঞ্চন,
(শেষে) ঐ নাম গেয়ে যাব গোলক ধামের পথে।

আমি তোমার নাথ আছি চিরকাল- Ami tomer nath

১। আমি তোমার নাথ আছি চিরকাল, তোমা ছাড়া কারো নই
থাকি বিশ্বাসে তব সন্নিধান বাসনা এ নিয়তই।

ধূয়া- আমায় লহ, লহ, লহ যীশু হে, ক্রুশের আরও সন্নিধান
দেহ আমার আমায়, আমায় প্রভু হে তব কুক্ষিদেশে স্থান।

২। অনুগ্রহ রূপ তৈলে আমারে, অভিষিক্ত কর নাথ
তোমার পবিত্র পরিচর্যাতে থাকি যেন দিন ও রাত।

৩। প্রার্থনাতে পাই কত আনন্দ, যখন শুনি তব রব
প্রাণের বন্ধু প্রায় শুনেছেন সদাই আমার কাতরোক্তি সব।

৪। তব সুগভীর প্রেমের মহিমা বোঝে সাধ্য আছে কার?
বুদ্ধির অতীত উচ্চ স্বর্গসুখ, বর্ণনা সাহিক তার।

৫। যবে যাব নাথ স্বর্গ-কাননে, মৃত্যু নদীর পরপার
তখন বুঝিব প্রেমের মহাত্ম, স্বর্গসুখ কি চমৎকার।
-অজ্ঞাত

আমি আর সইতে পারি না- Ami Ar Soite Pari Na

আমি আর সইতে পারি না
আমার ত্রান নাথ আজ ক্রুশেতে।

১। পথে লোক যাচ্ছে সারি সারি হে
তারা দেখিয়া কেউ দেখেনা।

২। নিষ্ঠুর সেনাগণে বর্শা হানে হে
তারা কারো বারণ শোনে না।

৩। প্রভুর পিপাসা হয়েছে ভারী হে
একটু জল চেয়ে তা পেলেন না।

৪। খেদে পর্বতগণ বিদীর্ণ হইল হে
হেরে ত্রাণনাথের যাতনা।

৫। যীশু তোমার জন্য এত সহিলেন হে
তোমার কঠিন মন কি গলে না।


আমি দুঃখে সুখে সদা তাঁরই মুখ চেয়ে রই- Ami Dukhe Sukhe Soda

আমি দুঃখে সুখে সদা তাঁরই মুখ চেয়ে রই
এ সংসারে কেবা আমার প্রিয় যীশু বই।

১। দুঃখের সময় হলে, তাঁরই কাছে যাই চলে
চক্ষু দুটি মুছে দিলে, সবই ভুলে রই।

২। হয়ে সুখী সুখকালে, ডাকি তাঁরে যীশু বলে
মনের কথা তাঁরে বলে, আরও সুখী হই।

৩। যীশু আমার সুখে সুখী, যীশু আমার দুঃখে দুঃখী
যীশুর কাছে যত থাকি, তত সুখ পাই।

আমার জুড়াল প্রাণ এসে যীশুর পায়- Amer juralo pran

আমার জুড়াল প্রাণ এসে যীশুর পায়
এসে দয়াল যীশুর শ্রীচরণ তলে, আমার ঘুঁচল ভবের ভয়।
(এসে দয়াল যীশুর চরণতলে)।

১। ঐ চরনে নাই রে দুঃখ-ক্লেশ, নাইরে ভবের জ্বালা পাপ অশান্তির লেশ
বুঝি দুগ্ধ মধু প্রবাহী সেই দেশ, আছে ঐ চরণ তলায়।
(ও সেই দুগ্ধ মুধু প্রবাহী দেশ)।

২। মনে আমি করেছি মনন, প্রভুর ঐ চরণে থাকব সর্বক্ষণ
আমার এই পাপ দেহে যাবৎ রয় জীবন, রব ঐ চরণ সেবায়।
(দেহে যতদিন মোর জীবন আছে)।

৩। সময় যেদিন ফুরাবে আমার, সেদিন যেতে হবে ছেড়ে এ সংসার
আমি হয়ে যাব মৃত্যু নদী পার, যীশুর ঐ চরণ নৌকায়।
(আমি মৃত্যু নদী পাড়ি দিব)।

আমার দেখতে দেখতে ফুরাল রে দিন- Amer dekte dekte furalo re din

আমার দেখতে দেখতে ফুরাল রে দিন
যাবার সময় হইল।
ঐ দেখ সূর্য বসে পাটে, বুঝি সন্ধ্যা হয়ে এল।

১। বোঝা বন্ধন যত আছে, সে সব ছাড়তে হবে সকল মিছে
সময় এল কাছে
কে আছে নিকটে আমার, তোমরা আমার সঙ্গে চল।

২। কে যাবি ভাই আমার সাথে, নইলে একলা আমার হবে যেতে
আজ এই আধাঁর রাতে
পরাণ আমার কাঁপে ডরে, তোমরা যীশু যীশু বল।

৩। সাথের সাথী আছে সেজন, যেজন আমার জন্য দিল জীবন
সইল দারুণ মরণ
এ জীবনের দুঃখ সুখে, সেজন আমার সঙ্গে ছিল।

৪। আজ আমার যাবার সময়, আমার কাছে আছে সেই দয়াময়
সঙ্গে যাবে নিশ্চয়
নিয়ে যাবে হাতে ধরে, পথের আধাঁর করে আলো।

৫। যীশু যীশু যীশু বলে, তোমরা গাও সকলে বাহু তুলে
আমার যাবার কালে
যাবার কালের শেষ নমস্কার, তোমরা সবার কাছে বলো।

আমার প্রান কাঁদে তাঁর তরে- Amer Pran Kade Tar Tore

আমার প্রান কাঁদে তাঁর তরে, বড় ভালবাসি গো তাঁরে
তাঁরে রাখব আমার অন্তরে (যত্ন করে, ত্রাণেশ্বরে)।

১। যেদিন তাঁরে দেখেছিলাম গো, দারুণ ক্রুশের উপরে
সেদিন আমার মন ভুলেছিল গো
ঐ রূপ জেগেছে মোর অন্তরে।
(নগরবাসী, দেখ আসি)।

২। পাপীর কারণ যীশুর মরণ গো, দেখলাম ক্রুশের উপরে গো
আছেন বর্শাতে বিধান ত্রাণনাথ, রক্ত বিন্দু, ঝরে গো!
(পাপ ধু’তে, কুক্ষি হ’তে)।

৩। প্রেম করে পাপীর তরে গো, প্রাণ দিলেন ক্রুশো’ পরে গো
এমন প্রেম আর কে করেছে গো
(নয়ন ভরে দেখব তারে)।

৪। যীশুর প্রেম অনুপম গো, এমন মিলবে না সংসারে গো
আমি গাব যীশুর প্রেম গাঁথা গো
(যীশুর প্রেমে, পাগল হয়ে)।

আমার কেটে গেছে মনের অন্ধকার- Amer Kate Gace Moner Andhokar

আমার কেটে গেছে মনের অন্ধকার- যীশু নামের বলেে
আঁধার কেটে যায়, ক্ষুধা মিটে যায়, যীশু নামের বলে।

১। মনের আঁধার যায় গো কেটে ডাক্‌লে ঐ নাম অকপটে
মনে আলো ওঠে জ্বলে,
যেমন নিশির আঁধার থাকে না আর হে
একবার ভানু দেখা দিলে।

২। নামের রসে ক্ষুধা ঘোঁচে, শুষ্ক হৃদয় সাগর মাঝে
মহা আনন্দের ঢেউ খেলে
যখন ডাকি ঐ নাম, বৈকুণ্ঠ ধাম হে, নেমে আসে ধরাতলে।

৩। নামে নামে আসে স্বর্গ, ধর্ম, অর্থ, চতুবর্গ
সুফল যীশু নামেই ফলে
তোমরা গাও যীশুর জয়, যাদের হৃদয় হে
সদ্য ত্রিতাপ জ্বালায় জ্বলে।

৪। ঘোঁচে নামে সকল জ্বালা, শান্তি, সুখ- আনন্দের মেলা
মেলা হৃদয়-মাঝে মেলো।
যীশু নামের মতন পরম রতন হে
আর কি আছে ভূমন্ডলে।

৫। যীশু নামে মেলে মুক্তি, ধর্ম শাস্ত্রে শুনি উক্তি
যত সাধু জনে বলে
যীশু নামের বলে মুক্তি মিলে হে
ঐ নাম গাব হৃদয় খুলে।

৬। যীশু নামে বাঁধা সে জন, যার নামে যায় ভবের বন্ধন
আর এই পাপের বন্ধন খোলে
তোমরা গাও যীশুর জয় ব্রহ্মাময় হে
যত নরনারী মিলে।

আমার হৃদয় মাঝে, সকাল সাঁঝে কে যেন কি কয়- Amer Ridoy Majha

আমার হৃদয় মাঝে, সকাল সাঁঝে কে যেন কি কয়
আমার উতলা হৃদয়।

১। বলে, ‘আমি ইস্রায়েল কূলের প্রহরী, কি বিদা কি বিভাবরী
আছি জেগে যগি যুগান্তর ধরি, আশ্রিতের পাহারায়।

২। ঐ যে শুনি- ‘নিদ্রা নাই দু’চক্ষে আমার, দুই নয়নে নাই তন্দ্রাভার
জাগি দিবা-নিশি পাশে তোমার, তোমার পাশের ছায়ায়।’

৩। ঐ যে শুনি, ‘রক্ষা করি তোমার জীবন অমঙ্গল করি নিবারণ
আমার চিরদিনের এই জাগরণ, ভালসেবে তোমায়।’

৪। ঐ যে, শুনি, ‘জন্মদিনে আর মরণের কাল, দুঃখের দিন আর সম্পদের কাল
আমি সকাল বিকাল-সন্ধ্যা সকাল, চিরকালের সহায়।’

আমার যত আশা, যত ভরসা- Amer Joto Asa Joto Vorosha

আমার যত আশা, যত ভরসা, রাখি ঐ চরণে
যত কথা, যত ব্যথা, সদা জাগে আমার মনে।

১। যত আশা বেড়ায় ঘুরে, আমার অন্তরের এই অন্ধকারে
সারা হৃদয় জুড়ে
বলিতে মোর নাই শকতি, আমি বলিব কেমনে?

২। জাগে প্রাণে যত কথা, আমার হৃদয়ের এই গোপন ব্যাথা
ওহে জগৎত্রাতা
কারে জানাই কে বুঝিবে, আমার কে আছে ভূবনে।

৩। একবার যদি পাই দরশন, আমি জানাব এই মনের বেদন
মনে আছে মনন
এসে যদি বসো তুমি, আমার হৃদয় পদ্মাসনে।

৪। শুভ সময় এল আমার, আমার খুলে গেছে মনের দুয়ার
পরশ পেয়ে তোমার
পরশ দিলে দাও দরশন, আজ আর থেকো না গোপনে।

৫। থেকো না লুকায়ে তুমি, তুমি দীনহীনের আশা ভূমি
আমার অন্তর্যামি
পুরাও দীনহীনের আশা, আশা পারাও নিজ গুণে।

৬। খুলে দও এই জিহ্বা আমার, আমি বলিব যা আছে বলার
ঐ পাদপদ্মে তোমার
বোবা জিহ্বায় ফুটুক কথা, দয়াল তোমার পরশনে।

আনন্দ ধরে না মনে- Anando dhore Na Mone

আনন্দ ধরে না মনে
প্রিয় নাথের প্রেমালাপনে,
(মোরা) যীশুর প্রেমে বাদাম তুলে চলে যাব সিয়োনে।

১। (শুন) শুভ সমাচার, (যীশু) খুলে স্বর্গ-দ্বার
জীবন-মুকুট হস্তে লয়ে ডাকেন বারে বার,
(ওহে) যুদ্ধেতে বিজয়ী ভক্ত, স্বর্গ
 তোমার কারণে।

২। (স্বর্গ) পিতার ভবন, (অসংখ্য) সাধু দূতগণ
নাচিছে গাহিছে সদা প্রফুল্ল বদন
(পিতা) আব্রাহাম ও লাসার আছেন, যিহুদা নাই সেখানে

৩। (আছে) জীবন-বৃক্ষের ফল, (আর) শান্তি-নদীর জল
আহার পানে তৃপ্ত সব ভকতের দল
(আমরা) তাহাদের সঙ্গে রব, চেয়ে যীশুর মুখপানে।